![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEg9aw4448DUFXkOvCUaRrgcvJsDQJmvdGR3KZnWt4bN5pConUwvu-fSBgPu-G30LuU_8rOwkRiSUeG73CK3xtXRt_UATqAEKa_Gd3pRCLk5SDY_YTQDYVsI2tMKDW0AchHDoV5PWsCkMViG/s640/maxresdefault.jpg)
বড় ছেলে 2 ««
*************
»দেখতে দেখতে
প্রায় ৫ টা বছর কেটে গেছে »রাশেদ
গাড়িতে চড়ে অফিস থেকে বাসাতে ফিরছে..
»আজ রাশেদ
প্রতিষ্ঠিত। অনেক বড়
চাকরি করে।
»গাড়িতে বসে,
রিয়ার দেয়া সেই ডায়রিটি বের করলো, যেই
ডায়রিতে
রাশেদ লিখেছে তার মনে জমানো অনেক না
বলা
কথা...
»পরে রাশেদ
ডায়রিটি খুলে পড়তে লাগলো,
.
"প্রিয় রিয়া,
আমি তোমার সেই রাশেদ...
অনেক বছর
তোমার সাথে কথা হয়নি..
৫ টা বছর কেটে গেছে..
জানতে খুব ইচ্ছা করে
কেমন আছো তুমি?
জানো তোমাকে আজও অনেক মিস করি।
তোমার
দেওয়া হাত ঘড়িটা
আমার অনেক পছন্দ হয়েছে।
আমি রোজ হাতে দিয়ে অফিসে যাই, .
এখন আমার মোবাইলে সব সময় চার্জ থাকে।
কারন তোমার দেওয়া পাওয়ার ব্যাংকটা সব
সময় আমার সাথে থাকে।
বাবা, মা, ভাই, বোন সবাই কল দেয়, শুধু তুমি
ছাড়া।
.
আর যখন
আমার শরীর ঘেমে যায়,
তখন
তোমার দেয়া আইস টিসু দিয়ে ঘাম গুলো মুছে
ফেলি।
.
সারাদিন কাজ শেষ করে বাসায় ফিরে
তোমার
সাথে কথা বলি,
তোমার দেওয়া ডাইরীর সাথে।
.
তুমি বলেছিলে,
হুট করে এসে একদিন এই ডাইরী চেয়ে বসবে।
তাই
তোমার দেওয়া ডাইরীর সাথে রোজ কথা
বলি।
ডায়রিটি
সব সময় আমার সাথে রাখি.
.
আর তোমার দেওয়া চকলেট গুলো জেসির খুব
পছন্দ
হয়েছে।
ওহ,
তোমাকে তো বলতেই ভুলে গেছি। আমার
অনেক বড়
একটা চাকরি হয়েছে। আজ আমার সব আছে,
শুধু তুমি নেই।
.
আমার বাবাও এখন টেনশান মুক্ত থাকে।
বোনের
দোকানে ও এখন বেশ ভালো বেচাকেনা
হচ্ছে।
আমার ছোট ভাইও
ভাল একটা কলেজে পড়াশুনা করছে. .
একটা কথা কি জানো রিয়া? তোমার আর
আমার
ব্যাপারটা আমার পরিবারের কেউ জানে না।
শুধু এক জন ছাড়া।
সে হচ্ছে জেসি,
তোমার দেওয়া চকলেট গুলো যখন তাকে
দিয়েছিলাম,
তখন সে খুব খুশি হয়েছিলো। সে আমাকে
বলেছিল,
আংকেল এগুলো কে দিয়েছে? সেদিন আমি ঐ
অবুঝ
মেয়েটিকে মিথ্যা বলতে পারিনি।
তাই বলেছিলাম,
তোমার মামি দিয়েছে এই চকলেট গুলা। তখন
সে
কি বলেছিল জানো?
- মামীটা অনেকটা ভাল।
মামা আমাকে
মামীর কাছে নিয়ে যাবে বলো? সেদিন আমি
অনেক কষ্টে কান্না লুকিয়েছিলাম। .
আজ জেসি অনেক বড় হয়েছে ক্লাস থ্রিতে
পড়ে।
খুব মেধাবী..
.
জানো রিয়া
আমি এখনও মাঝে মধ্যে
ঐ বেঞ্চে গিয়ে বসে থাকি, যেখানে বসে
আমি
তোমাকে বাদাম ছীলে দিতাম।
.
এখনও তোমার জন্যে
বাদাম নিয়ে বসে থাকি,
আর ভাবি,
এই বুঝি তুমি এলে.
কিন্তু
তুমি আসোনা।
পরে গোধূলি সন্ধাতে, ভারাক্রান্ত মনে
একা একা আবার পায়ে হেটে বাসাতে ফিরি
সব
কিছু আগের মতই আছে
নেই শুধু তুমি।
.
আজ তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। সেদিন
তোমার
হাতের রান্না গুলো আজ খেতে ভীষণ ইচ্ছে
করছে।
তোমার হাত ধরে আবার চলতে ইচ্ছে করছে।
.
জানো আমার
সব থেকেও তবুও আমার কিছু নেই মনে হয়।কারন
তুমি
এই সময় পাশে নেই।
.
তুমি ঠিক বলছিলে একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।
তোমার
সব কথা ঠিক হয়েছে, শুধু তুমি নেই।
.
যাকগে
তুমি ভাল আছোতো রিয়া??
দোয়া করি তুমি সময় ভাল থাকো, সুখে থাকো।
**
»ডায়রিটি পড়ে
রাশেদ চোখের জল মুছলো
*
»তার গাড়িটি
দ্রুত এগিয়ে চলছে।
.
«»হঠাৎ করে
রাশেদ রাস্তাতে রিয়াকে দেখতে পেলো
»রিয়া
রাস্তা দিয়ে একা হেটে চলছে - রাসেদ গাড়ি
থামালো।
তারপর
রিয়ার সামনে গেলো
.
- অনেকদিন পর
তাঁরা একে অপরকে অবাক চোখে দেখছে.. -
দুজন
দুজনের দিকে তাকিয়ে উভয়ের চোখ
অশ্রুসিক্ত হয়ে
গেলো। .
»রাশেদ বলল,
- কেমন আছ রিয়া?
- বলব,
আগে আমার বাদাম দাও
.
»রাসেদ
অশ্রুসিক্ত চোখে
একটুখানি হেসে,
পাশের বাদাম ওয়ালার কাছ থেকে এক
ঠোঙ্গা
বাদাম কিনে রিয়াকে দিল। *
- এখন বল,
কেমন আছ রিয়া?
- কেটে যাচ্ছে,
তুমি কেমন আছ?
- আছি আর কি!
তা তোমার বরকে দেখছি না যে?
- আমি বিয়ে করিনাই।
- কেন কেন?
- সেদিন বিয়ে হয়নি।
- কেন?
- কারন
ছেলেটা ভালো ছিল না, চোরাকারবারি ও
অন্যান্য খারাপ কাজের সাথে যুক্ত ছিল।
বিয়ের দিন
বিয়ের আসর থেকে
পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। এটা দেখে বাবা
হার্ড এ্যাটাক করে সেখানেই মারা হয়।
»কথাটি বলতেই
রিয়া কান্নাতে ভেঙ্গে পড়লো - প্লিজ রিয়া
কেদনা
শান্ত হও
- ওহ সরি!
- তারপর কি হলো রিয়া!
- তারপর
ব্যাংকে অনেক টাকা ঋন ছিল, বাবার সব
বিক্রি
করে ঋণ শোধ করি। তারপর
গ্রামে মামার বাসাতে চলে যাই। ঐখানে
একটা কলেজে কোন রকম একটা চাকরি নিই।
আর
আজ
কলেজের ব্যাপারে একটা কাজের জন্যে
শহরে
আসছি।
- এতকিছু
হয়ে গেলো আর আমাকে
একটিবারো কিছু জানালেনা?
- জানাতে চেয়েছিলাম,
কিন্তু ভেবে দেখলাম তুমি এমনিতেই অনেক
কষ্টে
আছ,
আর আমি আরো তোমাকে আর কষ্ট দিতে
চাইনি,
তাই তোমাকে কিছুই জানাইনি
- তো রিয়া
পরে আর বিয়ে করো নি?
- না
- কেন?
- কারন
তুমি আমায় ছেড়ে চলে গেলে, বিয়ে টা
ভেঙে গেলো,
তখন ভাবলাম,
হয়তো আমার কপালে বিয়ে নেই তাই আর
করিনাই।
- ওওও
- এই দেখ
সব আমিই বলছি,
তা তুমি বিয়ে করছ? সংসার কেমন চলছে।
তোমার
বউ তোমায় খুব ভালোবাসে তাই না রাশেদ? -
জানি না
- মানে?
- বিয়ে করলে তো ভালবাসবে!
- কেন বিয়ে করনি?
- তুমি নেই তাই,
তোমায় ফিরে পাব বলে।
- (এটা শুনে
রিয়ার চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে গেল) - এই পাগলি
কাঁদো কেন
- এত ভালবাসো আমাকে?
- অনেক ভালবাসি
*
»রাশেদ এবার
রিয়ার হাত ধরে বললো,
- রিয়া আমাকে বিয়ে করবে?
- (রিয়া রাশেদের দিকে অবাক চোখে
তাকালো) -
হ্যা রিয়া
সেদিন তুমি
আমার হাত ধরে কেদেছিলে, আমার সাথে
পালাতে চেয়েছিলে, কিন্তু
সেদিন আমি পারি নি সেদিন আমার কিচ্ছু
করার ছিল
না। কিন্তু রিয়া
আজ আমি প্রতিষ্ঠিত,
আজ আমার বাড়ি গাড়ি টাকা পয়সা সব
আছে..
তাই আজ আমি
তোমায় নিয়ে পালাতে চাই
কোনো এক স্বপ্ন মেশানো দেশের বন্দরে..
।
তুমি আমায় ফিরিয়ে দিয়ো না রিয়া। *
»এতক্ষণ
রাশেদের এসব কথা শুনে
রিয়ার চোখে পানি চলে আসল,
- এই পাগলি কাদো কেন?
আমার কথাতে কি কষ্ট পেলে?
- আরে ধ্যাত।
এটা কোনো কষ্টের কান্না না, এটা হলো
সূখের
কান্না, তোমাকে
আপন করে কাছে পাওয়ার কান্না। *
»পরে রাশেদ
সাথে বাসায় ফোন দিল।
- হ্যালো মা
- কে রাশেদ?
- হ্যা মা
- তুই কই বাবা?
- এইত চলে আসছি,
মা জেসি বাসাতে আছে?
- হ্যা আছে
- ফোনটা জেসিকে দাও তো
- আচ্ছা একটু লাইনে থাক্
*
- হ্যালো মামমা
- হে মামণি
কি করছ তুমি?
- এইত খেলছি
- কি খেলছ মামণি?
- পুতুল বিয়ে দিচ্ছি
- ও তাই?
- হ্যা
শোনো মামা চকলেট আনবে কিন্ত - আনবো
মামণি,
আর তোমার নানা নানীকে বলে দাও, তোমার
নতুন মামিকে নিয়ে আসছি। আর সেও তোমার
জন্যে
অনেক চকলেট আনবে
- সত্যি??
আচ্ছা মামা আমি
এখনই বলছি
*
»কথাগুলো শুনে
রিয়া লজ্জা পেয়ে রাশেদের বুক মুখ
লুকালো...
»রাশেদও মুচকি হাসি দিল
*
একটুপর রিয়া বলল,
- ঐ তোমাকে একটা ডায়রী দিয়েছিলাম,
ঐটাতে
কিছু লিখেছ?
- হুম
- কি লিখেছ?
- অনেক কিছু। পড়বে?
- অবশ্যই পড়ব,
বাসাতে গিয়ে ডায়রিটা দিও, পড়ে নেবো
- এখন আমার কাছেই আছে ডায়রিটা - সত্যি?
- হ্যা,
ঐটা সব সময় আমার সাথেই রাখি, যখন তোমার
কথা মনে পড়ে,
তখন কথা বলি,
- কই দেখি?
- ওয়েট,
গাড়িতে আছে
*
»পরে রাশেদ
ডায়রিটি এনে রিয়ার হাতে দিলো.. »রিয়া
ডায়রিটি
পড়তে লাগলো।
পড়া শেষে
রিয়া কাঁদতে লাগলো অঝর ধারাতে *
»রাশেদ
তার চোখের পানি মুছে দিলো। পরে রিয়া
রাশেদের বুকে মাথা রাখলো..
*
- এই রিয়া চলো
- কোথায়?
- কোথায় আবার!
আমার বাসাতে যাবে জেসির মামী হয়ে - হুম
যাব
তার আগে চলো আমাদের সেই, পরিচিত
জায়গায়..
যেখানে
আমি আর তুমি
না বলা কথাগুলো বলতাম.. সেখানে কিছুক্ষণ
বসে
থাকব, তোমার কথা শুনবো,
আর তুমি আমাকে বাদাম ছীলে দেবে, - ওকে
চলো
জেসির মামী
*
কথাটি বলতেই
রাশেদ ও রিয়া দুজনে হেসে উঠলো .
»আর এভাবেই
বড় ছেলের ভালবাসা সফল হলো... »আবার
তারা
একে অপরের হাত ধরে চলতে লাগলো.. .
আর বেজে উঠল,
সেই সুমধুর গানটি..
.
"এই ঠুনকো জীবনে তুমি কাচের দেয়াল,. এক
আধটূ
কারণে যদি হই বেসামাল,.. মন এ তাই তোমার
খেয়াল...
মনে তাই তোমার খেয়াল...
আমি কোনো মুখোশ পড়িনি,..
আমি কিছু আড়াল করিনি...
আমি শুধু ভালবেসেছি.. প্রেমের বাজী
ধরিনি...।
আজ স্বপ্ন বাধনে আমি তোমার হলাম,.. ঘুম
স্বপ্ন
যাতনে দিন রাত্রী সাজালাম, মনে হয় তোমায়
পেলাম
মনে হয় পেলাম
.
.
এই রকম আরো গল্প পেতে দয়াকরে ভিজিট
করুন। www.Abc24.GA
0 Response to "গল্প! বড় ছেলে ২"
Post a Comment