![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhOng6ysb-B_e4KcWCvEk8JEfSAgoK7GrX_ur1zD6CJP1lCr_9tk1Ea2pDq_dy_6MMZUWYG7mGgWo3G7H-HcVYx8b044C9znqTdDv0O2KsqOCeB2WXvQFYVl_b99OkK2Jti4kFpG8RX6WM/s1600/Screen+Shot+2012-08-03+at+08.03.33.png)
ছোট সেই বাড়িতে একটি ইঁদুর ছিল। একদিন ইঁদুরটি খাটের নিচে তাকিয়ে দেখল - কৃষক আর তাঁর স্ত্রী মিলে একটি ইঁদুর মারার কল ফাঁদ হিসেবে পেতেছে। ছোট ইঁদুর দ্রুত বাড়ির বাইরে বের হয়ে এলো। সামনে পড়ল কৃষকের মুরগী। ইঁদুর হাঁপাতে হাঁপাতে খবর দিল মুরগীকে, "বাড়ির ভেতরে ফাঁদ হিসেবে একটি ইঁদুর মারার কল বসানো হয়েছে।" মুরগী খুব একটা পাত্তা দিল না এই খবর, "আসলে এই খবরে আমার খুব একটা আগ্রহ নেই কারণ ফাঁদ আমার জন্য না। যাই হোক, তুমি একটু সাবধানে থেকো।"
বাধ্য হয়ে বেচারা ইঁদুর সামনে এগিয়ে গেল, খুঁজে পেল কৃষকের ছাগলটিকে। উত্তেজিত ইঁদুর সেই একই ভয়ের কথা জানালো, "বাড়ির ভেতরে ফাঁদ হিসেবে একটি ইঁদুর মারার কল বসানো হয়েছে। কিছু একটা করো দয়া করে।" ছাগলও বিরক্ত হলো এমন ইস্যুতে। ছোট ইঁদুরকে বুঝানোর চেষ্টা করলো ছাগল, "দেখো, ওই ফাঁদ আসলে আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আমি কেন ইঁদুর মারার কল বসানো'র কারণে চিন্তিত হবো? আমার আসলে কিছুই করার নেই এই বিষয়ে।"
নিরুপায় ইঁদুর শেষ আশ্রয় হিসেবে ছুটে গেল কৃষকের গরুর কাছে। হন্তদন্ত ইঁদুর নিজের ভয়ের কথা জানালো গরুকে, ""বাড়ির ভেতরে ফাঁদ হিসেবে একটি ইঁদুর মারার কল বসানো হয়েছে। দয়া করে কিছু করো।" যথারীতি ইঁদুরের অনুরোধ কানে তুলল না গরু। মুখে কৃত্রিম সহানুভূতি ফুটিয়ে তুলল ইঁদুরের জন্য, "হুমম। খুবই চিন্তার কথা তোমার জন্য। কিন্তু আমার জন্য তো এই খবরে ভয়ের কিছুই দেখছি না।"
কারো কাছ থেকে কোন সাহায্য না পেয়ে ব্যর্থ মনে ঘরে ফেরত এলো ইঁদুর। ইঁদুর মারার কল থেকে যতটা সম্ভব দুরে থাকতে হবে আমাকে, ভাবলো সে। পরদিন গভীর রাতে হঠাত শব্দ করে উঠলো ইঁদুর মারার কলটি। জেগেই ছিল কৃষক। ইঁদুর মারা পড়েছে ভেবে অন্ধকারেই কলটি হাত দিয়ে টেনে আনতে চাইল কৃষক। বেচারা দেখতে পায় নি - ইঁদুরের বদলে আসলে বিষধর এক সাপের লেজ আটকা পড়েছিল সেই কলে। আহত সাপ সাথে সাথে ছোঁবল বসিয়ে দিল কৃষকের হাতে! প্রতিবেশীরা ধরাধরি করে সে' রাতেই কৃষককে হাসপাতালে নিয়ে গেল। প্রাণে বেঁচে গেল কৃষক। দু'দিন পরে বাড়ি ফিরলেও খুব দুর্বল বোধ করতে লাগলো সে। 'স্বামীর ভালো-মন্দ কিছু খাওয়া উচিত' - এই ভেবে নিজেদের মুরগীটি জবাই করে স্বামীর জন্য স্যুপ বানালো কৃষকের স্ত্রী। পরদিন কিছুটা সুস্থ বোধ করলো কৃষক। ডাক্তার বাবু এসে দেখে গেল তাঁকে। যাবার সময় কৃষকের স্ত্রীকে জানিয়ে গেল, ছাগলের মাংস সাপে কাটা রোগীর সেরে উঠতে অনেক সাহায্য করে। নিমেষেই জবাই হয়ে গেল ছাগলটি। এদিকে আত্মীয়-স্বজনরা খবর পেয়ে সবাই ছুটে এলো কৃষককে দেখতে। পুরো বাড়ি ভর্তি মেহমান। পরবর্তী শুক্রবারে কৃষকের সেরে ওঠা উপলক্ষে আত্মীয়স্বজনদের উপস্থিতিতেই বিশাল খানাপিনার আয়োজন হলো। এবারে খাঁড়া পড়ল গরুর গলায়।
আর এইদিকে - চৌকাঠের উপরে বসে এই কয়দিনের যাবতীয় ঘটনা চুপচাপ দেখে গেল ছোট সেই ইঁদুর!
পাদটিকাঃ আমার আজকের সমস্যাই হয়তো আগামীকাল আপনার সমস্যা হয়ে উঠতে পারে। কারো সমস্যাকেই তুচ্ছ মনে করার কারণ নেই। ঘরের চার কোনার যে কোন এক কোনা ধ্বসে পড়লেই পুরো ঘর ভেঙে পড়া সময়ের ব্যাপার মাত্র!
0 Response to "এক কৃষক আর তাঁর স্ত্রী ছোট একটি গ্রামে থাকতেন।"
Post a Comment